একটু সময় নিয়ে পড়ুন। বদলে যেতে পারে আপনার জীবন, ইনশাআল্লাহ। এক দেশের ইমাম সাহেবের কথা।
ইমাম সাহেবের দশ বছরের ছোট একটা ছেলে আছে।প্রতি শুক্রবার ইমাম সাহেব জুম্মার নামাজ শেষ করে ছেলেকে নিয়ে দাওয়াতের কাজে বের হতো।রাস্তায় যাকে পেত তাকেই ইসলামিক বই,ম্যাগাজিন ইত্যাদি ধরিয়ে দিতো।
শীতের সময়।প্রচুর শীতে তুষার পরছে।তাই ইমাম সাহেব ঠিক করে রেখেছেন আজ আর তারা বের হবেনা।এই দিকে ছোট ছেলেটা গরম কাপড় পরে রেডি হয়ে এসে বলছে, "বাবা আমি রেডি।"
ইমাম সাহেব বললো, "কেন?"
ছেলেটা বললো, "কেন, তোমার মনে নেই! আজ আমরা দাওয়াতের কাজে বের হবো?"
ইমাম সাহেব বললো, "আজ যাবোনা,দেখছোনা বাহিরে তুষার পড়ছে?"
বাবার কথা শুনে ছেলেটা অবাক হয়ে বললো, "তুষার পরছে বলে কি মানুষের জন্য জাহান্নামে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে?"
ছেলের এমন গভীর প্রশ্ন শুনে বাবা বললো, "আমি আজ যাবো না।"
ছেলে বললো, "ঠিক আছে, তাহলে আমি যাই।" বাবা বললো যাও।
ছেলেটি বই নিয়ে বের হয়ে গেল।দুই ঘন্টা যাবত বিলি করছে, এর মধ্যে শীতে ছেলেটির হাত পা যেন জমে গেছে।শেষে আর একটা বই বাকি আছে কিন্তু কাউকে পাচ্ছেনা। এদিক সেদিক খুঁজে ছেলেটি বাড়ি ফেরার পথ ধরলো।ঠিক তখনি দেখলো একটা বাড়ি।ছেলেটি ভাবলো হয়তো বাড়িতে কেউ আছে তাই সে দরজায় গিয়ে কলিং বেল বাজাতে শুরু করলো।এক,দুই, তিন বার কলিং বেল বাজালো কিন্তুু ভেতর থেকে কোন সারা নেই।তারপর ছেলেটি চলে যেতে সামনে পা বাড়ালো।
হঠাৎ কোন এক অজানা শক্তি যেন তাকে আবার দরজার সামনে টেনে নিয়ে গেল।ছেলেটি এবার দরজায় ঠকঠক করতে লাগলো।কিন্তুু না এবারও কোন সারা নেই।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে আবার দরজায় ঠকঠক করলো।তারপর হঠাৎ ভেতর থেকে আস্তে করে একজন মধ্য বয়সের মহিলা দরজাটা খুললো।মহিলাকে দেখে ছেলেটি একটা হাসি দিল যেন তার সব কষ্ট শেষ হয়ে গেছে।
এবার মহিলার হাতে বইটি দিয়ে বললো,"আন্টি আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। আসলে আমি বলতে এসে ছিলাম যে- {পৃথিবীতে আর কেউ আপনাকে ভালোবাসুক বা না বাসুক, একজন আপনাকে অনেক ভালোবাসে,কেউ আপনার কেয়ার করুক বা না করুক, একজন আপনার খুব কেয়ার করে,আপনার খোঁজ রাখে।তিনি হলেন আামাদের রব। আল্লাহ।}
এই বইটি পড়ে আপনি আপনার রব সম্পর্কে জানতে পারবেন।"
এই বলে ছেলেটি চলে গেল।মহিলাটি কিছুই বললনা।
তারপরের শুক্রবারে যথাক্রমে ইমাম সাহেব খুতবা শেষ করে বললেন, কারো কিছু বলার আছে?মহিলাদের সাইড থেকে একজন মহিলা দাড়িয়ে বললো,
"আমার কিছু বলার আছে।"
তারপর মহিলাটি বললো, "এখানকার কেউ আমাকে চেনেনা। কারণ, আমি আজই এখানে নামাজ পড়তে এসেছি। এর আগের শুক্রবার পর্যন্তও আমি ছিলাম অমুসলিম।আমার স্বামী মারা গেছে। তারপর থেকে কেউ আমার কোন খোঁজ নেয়না। আমার বাবা-মা কেউ আমাকে দেখতে আসেনা।আমার খবর নেয়না। নিজেকে খুব একা আর অসহায় মনে হচ্ছিলো। ভাবলাম আমার তো কেউ নেই আমি আর বেঁচে থেকে কি করবো।তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আত্মহত্যা করবো।
সব কিছু রেডি করে ফেলেছি। ফ্যানের মধ্যে দড়ি ঝুলছে আর আমি চেয়ারে দাঁড়িয়েছি বিদায় নেওয়ার জন্য। একদম শেষ মূহুর্তে আমি গলায় দড়ি দিব, ঠিক তখনই কে যেন বারবার আমার দরজায় ঠকঠক করছে,কলিং বেল বাজাচ্ছে। একবার ভাবলাম খুলবোনা। কিন্তুু বারবারই দরজায় ঠকঠক করছে। কিছুক্ষন ভেবে গেলাম দরজা খুলতে। খুলে দেখি ফুটফুটে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে হাতে একটা বই নিয়ে। আমাকে দেখে হাসি দিয়ে বললো,
"আন্টি পৃথিবীতে আপনাকে কেউ ভালোবাসুক আর না বাসুক একজন আপনাকে অনেক ভালোবাসে। আর তিনি আমাদের রব, আল্লাহ।"
তারপর দরজা বন্ধ করে ঘরে ঢুকলাম। তখনও আমার দড়ি ঝুলছে। ভাবলাম আগে বইটা পড়ি।বইটা খুলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। পড়া শেষে আমি আমার আসল ঠিকানা খুঁজে পেলাম। এক লাথি দিয়ে চেয়ার আর দড়ি ফেলে দিলাম। পেয়ে গেলাম আমার আপনজন।আমার বাঁচার পথ। পেয়ে গেলাম আমার রব আল্লাহকে! সাথে সাথে কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলাম।
আলহামদুলিল্লাহ।
ছেলেটি আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার পথ দেখিয়ে দিলো। যা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা। আমি বইটার মধ্যে এই মসজিদের ঠিকানা পেয়েছি। আর এজন্য এসেছি যে, আমি ছেলেটার কপালে একটা চুমু দিব।"
মহিলার কথা শুনে সবাই কাঁদা শুরু করলো। ইমাম সাহেবের চোখ বেয়ে অঝোরে পানি পরছে। কোলে বসে আছে ছোট সেই ছেলেটি। ইমাম সাহেবের বুক যেন গর্বে ভরে গেল। এমন ছেলে আল্লাহ তাকে দান করেছেন।
একটু ভাবুন এই ছেলেটা কি ভেবেছে যে এখন আমি ছোট, বড় হয়ে এসব কাজ করবো..?
আর আমরা!
যখন ১০বছর,
খুঁজি খেলার মাঠ।
যখন ২০বছর,
lIfe is enjoy
জীবন তো একটাই, তাই Enjoy করি।
যখন ৩০ বছর,
টাকা পয়সা ইনকাম করবো কিভাবে??
যখন ৪০বছর,
খুঁজি একটু অবসর।
যখন ৫০/৬০ বছর,
তখন দৌঁড়াই মসজিদে!
জানেন কি আপনি?
১ দিনের একটা শিশুও মারা যায়!
তাহলে কি করে এটা ভাবেন যে, বৃদ্ধ হয়ে আল্লাহকে ডাকবো!
এখনো সময় আছে, ফিরে আসুন আল্লাহর কাছে। নামাজ পড়ুন। এখনি দৌঁড়ান মসজিদে।
বোনেরা, আপনি নামাজ পড়ুন ঘরে।
আপনার থেকে আপনার সন্তান শিখবে।
প্রতিজ্ঞা করুন আজ থেকে আর নামাজ বাদ দিবোনা। ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমিন।
Post a Comment